Posts

ফুটবল ড্রামায় পরিপূর্ণ রাত: মুসিয়ালার ইনজুরি, লাল কার্ড আর বীরত্বের গল্প

Image
  ফুটবলের অবিশ্বাস্য এক রাত! পিএসজি ও রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের ম্যাচে জিতে সেমিফাইনালে উঠে গেছে। স্কোরলাইন দেখে মনে হবে এ যেন নিয়মমাফিক জয়। কিন্তু আজ যা ঘটেছে, তা ফুটবলবিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। একদিকে জামাল মুসিয়ালার ইনজুরিতে সবাই শঙ্কিত, অন্যদিকে দুই ম্যাচেই ফলাফল অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পরেও অতিরিক্ত সময়ের উত্তেজনা ছিল চোখে পড়ার মতো। পিএসজির দুই ও রিয়ালের এক লাল কার্ড নিঃসন্দেহে এই দুই হেভিওয়েটের সেমিফাইনাল যাত্রায় প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে। কার্ড কাহিনি পরে আসছে, আগে দেখে নিই দুই ম্যাচের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলো। ম্যানুয়েল নয়্যার "সুইপার কিপার" হতে গিয়ে একাধিকবার হাস্যকর ভুল করেছেন। কিন্তু আবার এক পর্যায়ে অসাধারণ এক সেভ দিয়ে পুরোনো নয়্যারকেও মনে করিয়ে দেন। বারকোলার শটটা আগেভাগেই বুঝে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দুর্দান্ত এক রিফ্লেক্সে। কিন্তু দুয়ের শট ঠেকানো নয়্যারের পক্ষেও সম্ভব হয়নি। ভালো এক কাট-ইনে দুয়ে এমনভাবে শরীর ঘুরিয়ে বলটি পোস্টে গড়িয়েছেন, যাতে নয়্যার তাল মেলাতে পারেননি। রিয়ালের পক্ষে গোল করে জয় নিশ্চিত করেছিলেন এমবাপ্পে, দারুণ এক সিজর কিকে। কিন্তু পরে হুইসেনের লাল কার্ডের উপহারে...

এন্ড্রিকঃ নেক্সট সুপারস্টার নাকি আরও একজন ফ্লপ?

Image
  ✍️ June 7, 2024 ভিনিসিয়ুস বাঁ পাশ থেকে করলেন না আর কারিকুরি। দরকারই বা কী! ডি বক্সে থাকা নয়া এক গোল শিকারীতে আস্থা রেখে মারলেন বল উড়িয়ে। কোনো ভুল নেই বছর আঠারোর তরুণ তুর্কীর। মোক্ষম এক হেডে ফার পোস্টে জড়িয়ে দিলেন বল। ব্রাজিল পেল স্বস্তির জয়। শেষ মুহুর্তের এই গোল শুধু তাদের শুধু একটা ম্যাচই বাচিয়ে দিলনা, উপহার দিল যেন ভবিষ্যতের এক নতুন আশা ভরসাও।  নতুন এই নাম্বার নাইনের নাম এতদিনে নিশ্চয়ই শুনেছেন অনেকবারই। এন্ড্রিক ফেলিপে দে সউসা, রিয়াল মাদ্রিদের ভবিষ্যত ভাবা হচ্ছে যাকে।  আসি আসি করছিলেন অনেক দিন ধরেই, সেই পালমেইরাসে থাকার সময়ে। সেখানকার যুব দলে ১৬৯ ম্যাচে করেছিলেন মোট ১৬৫ গোল! পঞ্চম বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালে কোপা সাও পাওলো দে জুনিয়রে গোলের পর গোল করে প্রথম পান আন্তর্জাতিক পরিচিতি। বাঁ পায়ের এন্ড্রিক কিছুটা ব্রাজিলিয়ান রোনালদো দ্য ফেনোমেনন আর পেলের মিশ্রণ। কেউ কেউ রোমারিওর সাথেও মিল খুজে পান। বল পায়ে যেমন পছন্দ করেন কাটিয়ে যেতে, তেমনই একজন শার্প শ্যুটার।    মাঠে চাপের মুখেও বল পায়ে রেখে এগিয়ে যাওয়াটা তার জীবনের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মন মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। বাবার দরিদ্...

দাগীঃ ডিটেইলিংয়ে অনন্য এক সিনেমা

Image
২০২৫ সালের ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা সিনেমা দাগী তার ডিটেইলিং দিয়ে অনন্য। সিনেমার টাইমলাইন বোঝানোর জন্য পরিচালক যেভাবে বিভিন্ন “চিহ্ন” বা ইঙ্গিত ব্যবহার করেছেন, তা দর্শকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাশাপাশি ছিল ক্যারেক্টার বিজিএম আর শটের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহার। গল্পের সূচনা হয় ২০০৮ সালে, যার প্রমাণ বাটন ফোনের ব্যবহার। তিন বছর পর, অর্থাৎ ২০১১ সালে, নিশানের হাতে সোহাগ মারা যায়। এই সাল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে রঞ্জিত সিংয়ের একটি দৃশ্যে ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকা গান “যতই বল আমায় কোকাকোলা” যা কলকাতার সিনেমা ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে থেকে নেওয়া। সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে। এরপর, সময় এগিয়ে যায় ২০২৩-২৪ সালের দিকে। নিশান জেল থেকে ছাড়া পায় সম্ভবত ২০২৩ সালের একদম শেষ বা ২০২৪ সালের শুরুতে। তার শরীরের শীতকালীন পোশাক থেকে সময়কাল স্পষ্ট হয়। আরও ইন্টারেস্টিং হলো, বাবুর সঙ্গে চা খাওয়ার সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজে নিশোর নিজের সিনেমা 'সুড়ংগ' (২০২৩) এর গান “কলিজা আর জান” যা সময়কে স্পষ্টভাবে ২০২৩ সালের শেষে নিয়ে যায়। নিশানের বাবার ক্ষমা সংক্রান্ত ডায়লগ থেকে বোঝা যায় ততদিনে ক্ষমতাশালীর ...

ফাহমিদুল ইসলামঃ বাংলাদেশের নেক্সট স্টার?

Image
  কেমন খেললেন ফাহমিদুল ইসলাম? কেউ বলবেন খুব ভালো। কেউ বলবেন আরেকটু ভালো খেলতে পারতেন। তবে সরাসরি ইতি না টেনে চলুন দেখা যাক একটু বিশ্লেষণী চোখে।  ফাহমিদুল মাঠে ছিলেন ৬০ মিনিট। অন্তত একদম নিষ্প্রভ যে ছিলেন না তা বোঝা যায় অ্যাাটাক আর ডিফেন্স দুই জায়গাতেই উপস্থিতি দেখে। দু একবার ব্যাকহিল আর পাস দিতে ঠিকঠাক না হলেও তাঁর ক্যালিবার বোঝা গিয়েছে বাম পায়ের ওই শটটায়। রাকিব হোসেন বল নিয়ে তুলেছিলেন গতির ঝড়। তাতে তাল মিলিয়ে করা বুলেট শট স্পষ্টতই লোকাল উইংগারদের বিপরীত। পরে ফাহিম বল মহাকাশে পাঠিয়ে তাই প্রমাণ করে দিলেন!  জোরালো শটের পাশাপাশি নজর কেড়েছে ভালো ক্রসিংও। ট্র্যাডিশনাল উইংগারদের মতো উইং ধরে রান নিয়ে ক্রস করছিলেন তিনি ডি বক্সে। এইভাবেই করা অন্তত দুটো ক্রস ছিল একদম পিনপয়েন্ট। বিশেষত দ্বিতীয়টায় বল পেতে এক সেকেন্ড দেরিতে দৌড় শুরু করেও বলের দখল নিতে পারাটা স্পিড আর ফিজিকাল অ্যাবিলিটির জানান দিয়ে যায়। ফিজিকালিটির কথা আসলে দুটো স্লাইড ট্যাকলের কথাও আসবে। পারফেক্ট স্লাইডে বুঝিয়েছেন ডিফেন্ডিং সামর্থ্য। বয়স ১৮ হলেও একটা বড় প্লাস পয়েন্ট অবশ্যই এটা। মানিয়ে নেওয়ার সক্ষমতার কথাও বলতেই হবে। ই...

হামেস রদ্রিগেজ: কোপা আমেরিকায় এক রাজকীয় প্রত্যাবর্তন

Image
  ✍️ জুলাই ১৩, ২০২৪ হামেস রদ্রিগেজ- একসময় যার নাম গোটা ফুটবল দুনিয়া কণ্ঠস্থ করে ফেলেছিল, সেই কলম্বিয়ান মিডফিল্ডারের নামটাই যেন সবাই ভুলে বসেছিল। ২০১৪ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল জয়, দারুণ সব গোল, চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স, সবকিছু মিলিয়ে ছিল রূপকথার মতো উত্থান। কিন্তু ক্লাব ক্যারিয়ারে নিয়মিত জায়গা না পেয়ে শুরু হয় পতনের অধ্যায়। ইউরোপের ক্লাব ফুটবল ছেড়ে পাড়ি জমালেন কাতার, তারপর ব্রাজিলের সাও পাওলো ক্লাবেও সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি। এবারের কোপা আমেরিকা ২০২৪ নিয়ে তাই অনেকেই সংশয়ে ছিলেন হামেসের জায়গা নিয়ে। কিন্তু কোচ নেস্তর লরেঞ্জো তাঁর উপরই ভরসা রাখলেন একেবারে নেতা বানিয়ে দিয়ে! সেই আস্থার পূর্ণ প্রতিদানই যেন দিয়ে চলেছেন হামেস।   ৫  ম্যাচে করেছেন ১ গোল, দিয়েছেন ৬টি অ্যাসিস্ট। প্রত্যেক ম্যাচেই রেখেছেন সরাসরি প্রভাব। ম্যাচ বাই ম্যাচ পারফরম্যান্স প্যারাগুয়ে ম্যাচ: ২টি অ্যাসিস্ট কোস্টারিকা ম্যাচ: জয়সূচক গোলে অ্যাসিস্ট ব্রাজিল ম্যাচ: গোল না পেলেও তৈরি করেন ৩টি সুযোগ, ৮১% পাস অ্যাকুরেসি পানামা (নকআউট): ১ গোল + ২ অ্যাসিস্ট উরুগুয়ে ম্যাচ: মেসির রেকর্ড ভাঙা অ্যাসিস্ট ৩৩ বছর বয়সী হামেস হয়তো আগের ম...

বাংলাদেশ দলে কোন পজিশনে ভালো খেলবেন হামজা চৌধুরী?

Image
হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের হয়ে খেলার অনুমতি পেয়েছেন এই সেদিন। তবে প্রশ্ন এখন এটাই তিনি খেলবেন কোন পজিশনে? হামজা মূলত হোল্ডিং মিডফিল্ডার। ডিফেন্ডারদের সামনে থেকে ডিফেন্সকে শিল্ড দিতে পারদর্শী সিলেটি এই ফুটবলার। ডেস্ট্রয়ার রোলে ক্যাসেমিরোকে মনে করিয়ে দেন অনেকটাই। মারতে পারেন লং রেঞ্জের শটও। সাম্প্রতিক সময়ে অবশ্য খেলছেন রাইট ব্যাকে। সেখানেও সমানে দৌড়ে আসছেন সামনে, দিচ্ছেন কি পাস, আবার সমানতালে পিছনে গিয়ে করছেন ট্যাকেল। বাংলাদেশ দলে তাঁকে হোল্ডিং মিড বাঁ রাইটব্যাকে খেলালে অপচয় হবে তা সবাই মানছেন। আবার এই পজিশনে খেলোয়াড়ও আছেন বেশ ভালো। তাহলে কোথায় খেলালে ভালো? আমার মনে হয় হামজাকে খেলানো উচিত ডান দিকে বক্স টু বক্স মিডফিল্ডার ভূমিকায়। কেন সেটাই এবার বলব। বাংলাদেশের হয়ে শেষ দুই ম্যাচে এই পজিশনে খেলেছেন মজিবুর রহমান জনি। চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্স, বিশেষ করে তাঁর লং রেঞ্জের গোলায়ই তো জিতল লাল সবুজরা। তবে টেকনিকে তো হামজা এগিয়ে থাকবে নিঃসন্দেহে।  বাংলাদেশের মিডফিল্ডে মোহাম্মদ রিদয় আর সোহেল রানার জায়গা যেন একেবারে পাকা। যদিও চাপের মাঝে বল হারানোর প্রবণতা সোহেল রানার আছে। ডানে হামজা থাকলে এই পরিস্থ...

তুফানি ওয়ান টেক শটের ব্যবচ্ছেদ

Image
তুমি কোন শহরের মাইয়া গো লাগে উড়াধুড়া!  জ্বি হ্যাঁ, উড়াধুড়াই লাগিয়ে দিয়েছে তুফান। সিনেমা হল থেকে ওটিটি সব জায়গাতেই পাচ্ছে দর্শক বন্দনা। অনেকরকম আলোচনা হচ্ছে এই মুভি নিয়ে। এতসব হাইপের মাঝে চার মিনিটের এক ওয়ান টেক শট নজর কেড়েছে সবার। ওয়ান টেক শট সিনেমা দুনিয়ায় স্টোরিটেলিংয়ের এক ব্যতিক্রমী নাম। একটা সিনেমা বা কোনো একটা নির্দিষ্ট দৃশ্য এমনভাবে আগাবে যে মনে হবে একটা শটেই তা শেষ হয়েছে। এডিটিংয়ের ভাষায়, কোনো কাট থাকবেনা। আল্ফ্রেড হিচককের Rope থেকে শুরু হয়ে বর্তমান সময়ে অনেক মুভিতেই ব্যবহ্রত হয়েছে এই টেকনিক।  তবে বাংলাদেশি সিনেমায় ওয়ান টেক শট? অল্প কয়েকটাই হয়তো পাওয়া যাবে। সেই অল্প কয়েকটার একটা সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া তুফানের একটি দৃশ্য। হসপিটাল সিনে শাকিব খানের প্রবেশ থেকে সিড়ির সামনে গাড়ি ব্লাস্ট পর্যন্ত যার ব্যাপ্তি। এই শটের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়েই কথা হবে আজকে। দিকগুলো আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব পাচ পয়েন্টে।  পয়েন্ট নাম্বার এক: camera angle দৃশ্যের শুরুতে ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল রাখা হয়েছে নায়কের পেছন থেকে। আবার গুলি করার সময় ক্যামেরা রয়েছে সামনে, অর্থাৎ দৃশ্যে নায়কের এন্ট্রইর ইম্প্যাক...